অর্পিতা সরকার এর জনপ্রিয় উপন্যাস জীবন স্রোতের আঁকে বাঁকে এর পর্যালোচনা -Review of Arpita Sarkar’s popular novel Jeevan Sroter Ake Banke

আমার ব্লগ এ তোমাদের সবাই কে  স্বাগত। আজকে কথা বলব  অর্পিতা সরকার এর লেখা জীবন কেন্দ্রিক উপন্যাস “জীবন স্রোতের আঁকে বাঁকে কে নিয়ে”।

পুরো উপন্যাস এ পনেরো টা গল্প আছে। আর প্রত্যেক টা গল্পই ভিন্ন স্বাদের। এখানে যেমন প্রতিশোধের গল্প আছে, তেমনি আছে ভালবাসা, মায়া আর আবেগ এবং

অনুশোচনা এর গল্প। আছে একদম তোমার আমার মত নিম্ন মধ্যবিত্ত একটা ছেলের দামী আইটি চাকরি ছেড়ে  নিজের স্বপ্নের ক্যাফে তৈরি করার গল্প। তাহলে চলো শুরু করা যাক।

Five school student there in same school and same section.

তাদের তিনজনকেই থানাতে ডেকে পাঠান থানার ওসি সৌমিত্র বাবু। ঠিক থানায় আসার আগেই খুন হয় দেবমাল্য। এরপরে সৃজন আর রুদ্রনীল অফিসার সৌমিত্র বাবুকে বলেন সুনয়ন বলে একটা ছেলের কথা।,

এই ছেলেটা ওদের সাথে স্কুলে পড়তো। সুনয়ন ছিল মূলত গরিব পরিবারের ছেলে। কিন্তু পড়াশোনায় তুখোরক্লাসে ও সব সময় ফাস্ট হত। এইদিকে এই পাঁচ বন্ধুর খুব হিংসে হয়েছিল , এবং

তাই ওরা একবার সুনয়নকে ইচ্ছা করে ভুল পরীক্ষার রুটিন দিয়েছিল এবং সেই রুটিন ফলো করেই সুনয়ন পরীক্ষায় ফেল করে। ওদের দাবি সুনয়ন এই হত্যাগুলো করছে ওর বদলা নেওয়ার জন্য।

Suddenly students are murder on road


ওদের কথা মত সুনয়ন কে বাড়ির থেকে তুলে নিয়ে আসে এবং কস্টাডি তে দুদিন রাখে।যাতে বাকি দুজনের খুন আটকানো যায়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে বাকি দুটো ছেলে সৃজন আর রুদ্রনীল খুন হয়। ,

পুলিশ বুঝতে পারে যে এই খুন গুলো সুনয়ন করছে না । সুনয়ন কে ছেড়ে দেয়, সুনয়ন আনন্দে মিষ্টি কিনে বাড়ি ফেরে, । গল্পটা এতোটা একদম সাদা মাটা , কিন্তু টুইস্ট আসে এই খানে,। বাড়িতে গিয়ে ও দেখতে পায় ওর বাবা আর অর প্রেমিকা কে।

ওর প্রেমিকা তখন জল দিয়ে রক্তে মাখা জামা ধুচ্ছিল, ওর প্রেমিকা রেশমিকে একটাই কথা জিজ্ঞেস করল বাবার আজকে কোন অসুবিধা হয়নি তো রেশমি আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিল আচ্ছা বাবার সাথে আমি ছিলাম।


সুনয়নের বাবা শিবনাথ পাল দীর্ঘদিন বিএসএফে চাকরি করেছেন। কিন্তু ডিউটির সময় জঙ্গিদের সাথে গুলি লেগে ওনার নিচের পা দুটো বাদ যায় । আর সুনয়ন এর মা অনেকদিন আগে ক্যান্সারে মারা গেছে,

তাই সুনয়নের প্রেমিকা রেশমীকে সম্বল করিয়ে জীবন কাটছে ওর বাবার।এই রেশমির সাথে সুনয়নের পরিচয় হয় একটা পড়ার ব্যাচে, দুজনের লক্ষ্য একই রকম ছিল একদম মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলেমেয়ে হয় তাদের চাকরি পেতে হবে।https://selfknowledgepro.com/wp-admin/edit.php

2 .দ্বিতীয় গল্প ঘরোয়া

এই গল্পটা লেখা হয়েছে, দুজন প্রবীণ নাগরিক কে নিয়ে, প্রথমজন উদয় চক্রবর্তী আর উনার স্ত্রী মিনতি। উদয় তার স্ত্রী মিনতিকে একটা ভালো বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে চায় যেখানে মিনতি তার বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে কাটাতে পারবে।

A75 year old man took his wife and send him a old age home

সেখানে এসে আলাপ হয় শ্রাবণী নামে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যিনি এই বৃদ্ধাশ্রম টা চালান।শ্রাবণী উদয় বাবু কে দেখে ওনাকে আতিথেয়তা জানিয়ে বললেন তার এই বৃদ্ধাশ্রম মায়ার বাঁধন একেবারে ঘরোয়া পরিবেশের মত।

এই ঘরোয়া প্রমাণ করতে গিয়েই নিজের ভালো থাকাটাই আর নিজের ভালো লাগা গুলোকে কখন যেন বিসর্জন দিয়ে ফেলেছে মানুষটা। তাই উদয়বাবু জান মানুষটা যেন তা সাজানো সংসদ ছেড়ে শেষ বয়সটুকু একটু প্রাণ খুলে বাঁচে।https://selfknowledgepro.com/wp-admin/edit.php


উদয় বাবুর কাছে সবটা শুনে খুব ভালো লেগেছিল শ্রাবণীর। তাই শ্রাবণী, প্রথম দিনই উদয় বাবু আর ওনার স্ত্রী মিনতিকে থাকার জন্য একটা ভালো ঘর দিয়েছিল এই বৃদ্ধাশ্রমে ।

এবং বৃদ্ধা মিনতিকে দায়িত্ব দিয়েছিল ওই বৃদ্ধাশ্রম এর বাগান পরিচর্যা করার। এরপরে যত দিন যায় উদয় বাবু দেখতে থাকলো, মিনতি যেন আস্তে আস্তে ওই বৃদ্ধাশ্রমে প্রাণ খুলে বাঁচতে শুরু করেছিল যেভাবে উদয় বাবু নিজের স্ত্রীকে দেখতে চেয়েছিলেন।

3.রাঁধুনি –
বাড়ির একমাত্র ছেলে  অতনু এবার থেকে হোস্টেলে গিয়ে থাকবেএটাই ওর বাবার সিদ্ধান্ত। তিন দিদির পরে অতনু একমাত্র ছেলে ওই বাড়ির তাই স্বাভাবিকভাবেই ও সবার আদরের।

10 years old a boys father send him to a hostel

অতনুকে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যায় ওর জেঠিমা, যে ছেলেটা নাদুস নুদুস ভাবে হোস্টে লেগেছিল সে একদম রোগা হয়ে গেছে। এরপরে অতনুর কাছ থেকে হোটেলের খাওয়া-দাওয়া সব খুঁটিনাটি খবর জানতে থাকে ও জেঠিমা।

যদিও তাতে কোন লাভ হয়নি। বেলা মাসি সেই আগের মতই সেই একই মসলা সব তরকারিতে দিয়ে রান্না করে। তবে অতনুর এখন আর অসুবিধা হয় না ওর এই খাবারটা অভ্যাস হয়ে গেছে |

৪.পাত্রীপক্ষ:
বছর তিরিশ এর বাঙালি ছেলে পার্থ বর্মন বিয়ে করবে ঠিক করেছে। সেই সৌজন্যেই দেখতে গেছে বছর ছাব্বিশ এর মেয়ে প্রীতিলতা কে। প্রথমে পার্থ একটু লজ্জাবোধ করলেও, প্রীতলতার কাছে তার শখের কথা জানতে চাইলো ।

প্রীতিলতা বললো সে বই পড়তে খুব ভালোবাসে। এরপরে আস্তে আস্তে প্রীতিলতার সাথে পার্থর বন্ধুত্ব হতে লাগলো। প্রীতিলতার কাছ থেকে ও জানতে পারলো যে ওদের পরিবারে সবার নাম কোন না কোন স্বাধীনতা বিপ্লবীদের নামে।

একটা বাঙালি পরিবার এর মিলন

যেমন মেজো মামার নাম বিনয় ছোট মামার নাম রাসবিহারী। আর প্রীতিলতার বাবার নাম ক্ষুদিরাম। আর মায়ের নাম লক্ষী। সেটা অবশ্যই লক্ষী বাই এর নাম অনুকরণে।

পার্থকে একদম চুপচাপ থাকতে দেখে প্রীতিলতাই বেশ অদ্ভুত রকমের প্রশ্ন করতে শুরু করে যাতে পার্থ যেন আরো অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে, যেমন ও ব্যাংকে সুন্দরী মেয়েদের দিকে তাকায় কিনা,

বন্ধুদের মধ্যে সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে আলোচনা হয় কিনা, এইসব। পার্থ বুঝতে পারে প্রীতিলতা তার সাইকোলজিক্যাল টেস্ট নিচ্ছে। শুধু তাই নয় প্রীতিলতার সাইকোলজিক্যাল টেস্ট এর কাছে পার্থর আগেও দুজন হেরে গেছে।

৫.সপ্তসুর-

এই গল্প শুরু হয় রক্তিমা সান্যাল নামে একজন উঠতি গায়িকাকে নিয়ে। রক্তিমা সল্টলেক এর বাড়িতে একাই থাকে ওর হাজবেন্ড শুভ্রর সাথে।
এইরকম একদিন হঠাৎ করেই মাঝ রাত্রি বেলা রক্তিমার কাছে ফোন আসে ,

যে ওর হাজবেন্ড শুভ্র একটা বড় অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। শুভ্র কে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই হাসপাতালের খোদ ডাক্তারি রক্তিমাকে ফোন করে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসতে বলে।

মধ্য রাতের মধ্যে ঘুম চোখে রক্তিম বেশ কিছুটা ঘাবড়ে যায়। ও বুঝতে পারে না এখন কাকে ফোন করবে? শুভ্রোর অফিসের কলিগদের নাকি শুভ্র ওর মা-বাবাকে। কোন কিছু বুঝতে না পেরে ওই গাড়ি নিয়ে নার্সিংহোমের দিকে রওনা হয়।

শুভ্র সাথে ওর আলাপ হয়েছিল একটা মিউজিক লঞ্চ পার্টিতে। শুভ জানিয়ে ছিল ও রক্তিমার ঠিক কত বড় ভক্ত। এমনকি শুভর ফোনেও রক্তিমার গলার গান রিংটোন করে রাখা।

একজন বাঙালি গায়িকা জীবনের গল্প

শুভ ব্যাঙ্গালোরে একটা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করত। বর্তমানে কলকাতায় ফিরে এসেছে একটা মিউজিক কোম্পানিতে ইনভেস্ট করেছে। এই মিউজিক কোম্পানির হয়ে একের পর এক হিট গান গেয়ে সফলতার চূড়ায় ওঠে রক্তিমা।

এরপরে শুভ্র আর রক্তিমার বিয়ে হয়। সেই বিয়ে তো উপস্থিত হয় টলিউডের নানা সেলিব্রেটিরা। কিন্তু এই দুর্ঘটনাই রক্তিমার সবকিছু ভেঙে চড়ে গুড়িয়ে দেয়।

হাসপাতালে ওর জন্য যে এত বড় একটা আঘাত অপেক্ষা করে রয়েছে সেটাও বুঝতেই পারিনি। হাসপাতালে পৌঁছেই ও শুভ্রর খোঁজ করতে থাকে।

ডাক্তার এসে জানায়, শুভ্রের ইন্টারনাল একটু হেমারেজ হয়েছে তাই জন্য ওটি করতে হবে । তাই রক্তিমাদের ডাক্তারের কথা মত কন্সেন্ট পেপারে সই করে দেয়। অপারেশন সাকসেসফুল হওয়ার পর শুভ্র জ্ঞান ফেরা পর্যন্ত রক্তিম অপেক্ষা করতে থাকে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই শুভ্রোর জ্ঞান ফিরতেই রক্তিম ওকে দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায়। এটা আসলে শুভ্রই না এটা দিব্যজ্যোতি।   এই দিব্যজ্যোতির সাথে রক্তিমার আলাপ হয়েছিল রিয়েলিটি শো তে।

হঠাৎ দিব্য জ্যোতি কেন রক্তিমাকে তার স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিল এই নার্সিংহোমে এসে। এই কথা ভাবতে ভাবতেই নার্সিংহোমের বাইরে এসে রক্তিমাও ফোন করলো শুভ্রকে। শুভ্র ফোন ধরার আগেই একজন রিপোর্টার ওখানে এসে উপস্থিত হলো এবং

রক্তিমাকে ওর নানা ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকলো। এরই মধ্যে শুভ্র ওকে ফোন করলো। শুভ্রের ফোন ধরেই ও বুঝতে পারল শুভ্র সবকিছু জেনে গেছে।

রক্তিমার রীতিমতো চিৎকার করে ফোনে শুভ্র কে বোঝাতে থাকল যে এটা একটা ট্র্যাপ ওকে ঠকানো হচ্ছে ,


দিব্যজ্যোতি কেন যে ওর সাথে এটা করল সেটা জানার জন্য ও আর একবার ছুটে গেল দিব্যজ্যোতির কাছে। ততক্ষণে জ্ঞান এসেছে দিব্যজ্যোতির। রক্তিমা যা ভেবেছিল ঠিক সেটাই হলো। দিব্যজ্যোতি এসেছে রক্তিমার উপর বদলা নিতে।


দিব্যজ্যোতির সাথে রক্তিমার আলাপ হয়েছিল একটা রিয়ালিটিশো তে। দুজনের মধ্যে কম্পিটিশন ছিল তুঙ্গে। বরং বলতে গেলে দিব্যজ্যোতি রক্তিমার থেকে কয়েকটা,

এপিসোডে এগিয়েই ছিল। রক্তিমা জানত ওকে যদি জিততে হয় তাহলে এই রিয়েলিটি শো থেকে দিব্যজ্যোতিকে সরাতেই হবে।

তাই ও সাথে সাথে ওর মাথায় একটা একটা ফন্দি করে। দিব্যজ্যোতির দীর্ঘদিনের প্রেমিকা শুভেচ্ছা কে ও কয়েকটা সেলফি দেখায় যেখানে দিব্যজ্যোতি আর রক্তিমা খুব ঘনিষ্ঠভাবে আছে । দিব্য জ্যোতির প্রেমিকা শুভেচ্ছা কোনভাবেই এই দাগকাটা সামলাতে পারিনি।

তাই সে আত্মঘাতী হয়। আর নিজের প্রেমিকা কে হারিয়ে দিব্যজ্যোতি কেন অবসাদে চলে যায়। ডিপ্রেশন এমনভাবে দিব্যজ্যোতিকে গ্রাস করে যে ও গানের জগত থেকেই চিরকালের মতো ঝরে যায়।

আর শেষমেষ সেই রিয়েলিটি সাথে রক্তিমা জয়ী হয়।
তবে এই ছোট গল্পের টুইস্ট অপেক্ষা করছে গল্পের একদম শেষ কটা লাইনে। একদম শেষে দেখা যায় এই দিব্যজ্যোতি হচ্ছে শুভ্র র ভাই। ,

আর শেষমেষ শুভ্রই দিব্যজাতিকে তার মিউজিক কোম্পানির সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেয়। আর রক্তিমাও বুঝতে পারে শুভ্রই তার ভাইয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এতদিন ওর সাথে ভালোবাসার কি সুন্দর নিখুঁত অভিনয়টা করে গেছে।

রক্ত গোলাপ: এই গল্প লেখা হয়েছে মূলত পূবালী আর নিশান কে নিয়ে। দুজনেই সদ্য বিয়ে করেছে। পূবালী ঘরের বউ হল নিশান একটা ফুলের দোকান চালায়।

দুজনের সংসার জীবন ভালোই চলছিল কিন্তু হঠাৎ করেই যেন তাদের দুজনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। একে অপরকে সন্দেহ করতে থাকে।


এরপর তারা দুজনে তাদের নতুন বাড়িতে অপর কারোর উপস্থিতি লক্ষ্য করতে শুরু করে। সেটা কেউ না, একটা ব্যাপারটা যে প্রতিশোধ নিতে চায়। যার নাম রুমেলা।
এই রুমেলা একসময় ভালবাসতো নিশানকে।

একটা বাঙালি ছেলের পরিবার এর অদ্ভুত ঘটনা (image source.ai)


কিন্তু নিশান তাকে এড়িয়ে গেছিল। যদিও রুমেলা অপর একটা ছেলেকে ভালবাসে তাকে বিয়ে করে। কিন্তু সেই সংসার ও ভেঙ্গে যায়। তাই রুমেলা বিশ্বাস করে নিশান যদি ওর ভালবাসাকে মেনে নিত তাহলে ও আর নিশান একসাথে সংসার করতে পারত।

অবশেষে বাধ্য হয়ে নিশান এক তান্ত্রিকের সাহায্য নেয়। সেই তান্ত্রিক নিশান কে একটা ছোট রজনীগন্ধা ফুলের মালা রুমেলা শ্বশুরবাড়ির ঘরে রেখে আসতে বলে।

নিশান রীতিমতো নিজের জীবন বাজি  রেখে এই কাজটা করে আর অবশেষে রুমেলা ওদেরকে ছেড়ে চলে যায়।

একটা বাঙালি ছেলে তান্ত্রিকের সামনে বসে আছে (image source: ai)

ভোরের স্বপ্ন::
ঘুমের মধ্যে মাঝে মাঝেই দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে যায় অনির্বাণের। ওর সব সময় মনে হয় কেউ যেন ওকে ধরার চেষ্টা করছে কেউ যেন ওকে তাড়া করছে। এই নিয়ে ওর স্ত্রী দীপিকা খুবই চিন্তিত।


আর ওর ছেলে অরিত্র তো রাত্রে বেলা বাবার এই কান্ড দেখে ঘুম থেকে উঠে বাবার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। দীপিকা এরপর অনির্বাণকে একজন সাইক্রেটিক ডক্টর এর কাছে নিয়ে যায়।

একটা বাঙালি ছেলের জীবনে ঘটে যাওয়া অদ্ভুত ঘটনা(ইমেজ google ডট.ai)


সেখানে কি দীপিকা জানতে পারে অনির্বাণ  স্কুল লাইফে ক্লাস নাইন থেকে টেনে ওঠার সময় অংকে ফেল করেছিল । এরপরই বাবা তাকে শম্ভু চরণ নামে ওর স্কুলেরইএক অংকের শিক্ষকের কাছে ভর্তি করে দেয়।


ধীরে ধীরে অনির্বাণের অংকে ভয় কাটতে থাকে এবং অনির্বাণ মাধ্যমিকে খুব ভালো রেজাল্ট করে। কিন্তু সেই শিক্ষকের নামে মিথ্যে প্রচার করা অনির্বাণ। শিক্ষক নাকি একমাত্র স্কুলে ভালো না পড়ে প্রাইভেট স্টুডেন্টদেরই ভালো পড়ায়।


এই অপমানে খুব শম্ভুচারণ ট্রান্সফার নিয়ে অন্য স্কুলে চলে যায়। আর এত বছর পর সেই শম্ভুচারণ শিক্ষকই এসছে অনির্বাণের স্বপ্নে।। অনির্বাণ বুঝতে পেরেছিল ওর ছেলেও ওর মত অংকে দুর্বল।


দীপিকা এই ঘটনা জানতে পেরে ঠিক করে অনির্বাণকে ওর পুরনো শিক্ষক শম্ভু চরণের কাছে নিয়ে যাবে। সেইমতো দীপিকা অনির্বাণকে ওর শিক্ষক শম্ভু চরণের কাছে নিয়ে যায়।
শম্ভু চরণ কে দেখেই রীতিমত ভেঙে পড়ে অনির্বাণ এবং স্যারের নাম বদনাম করার জন্য অনির্বাণ ও শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চায়। যদিও শম্ভু চরণের আর কিছুই মনে নেই।, অনির্বাণকে একজন কলেজের প্রফেসর হতে দেখে শম্ভু চরণ বেজায় খুশি।


শম্ভু চরণ যখন জানতে পারে যে অনির্বাণের ছেলেও ওর মত অঙ্কে দুর্বল তখন সে খুশি হয়ে বলে তার ছেলের অংকে ভয় কাটানোর দায়িত্ব তার। আর এখানেই যেন মুক্তির স্বাদ পায় অনির্বাণ।


৭.সোনাঝুরিতে বৃষ্টি নামলো :
আদিত্য নারায়ন পেশায় একজন ব্যবসায়ী।  তার এক ছেলে আর এক মেয়ে অরিত্র আর আত্রেয়ী। বড় মাপের ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য তার সম্পত্তির কিছু কম ছিল না। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছেলে মেয়েকে একাই মানুষ করেছেন তিনি ।

এক সফল ব্যবসায়ী ও জীবনের গল্প(image:lexica.ai)


আইসক্রিম আর সিমেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি শান্তিনিকেতনে একটা বাড়ি কিনে রিসোর্ট তৈরি করেন আদিত্য নারায়ন সেখানে মাঝে মাঝে ছুটি কাটাতে আসবে বলে। আর এই রিসোর্টের দায়িত্ব আদিত্য নারায়ন দিয়ে গেছিল জগন্নাথের হাতে যাকে,


সে নিজের ছেলের মতোই দেখতো। আদিত্য নারায়ন মারা যাওয়ার পর তার সম্পত্তি সমানভাবে দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে ভাগ করে দিলেও তার শান্তিনিকেতনের সেই বাড়ি দিয়ে যায় জগন্নাথের নামে।


আর এই শান্তিনিকেতনের বাড়িতেই রিসোর্ট বানানোর ইচ্ছা ছিল আদিত্য নারায়নের ছেলে ওর অরিত্র স্ত্রী পারমিতার।
পারমিতা খুব আপসেট হয়েছিল যখন সে জানতে পারে তার শশুর বাড়িটা অন্য লোকের নামে লিখে দিয়ে গেছে। পারমিতা চেয়েছিল ওই বাড়িটাকে একটা রিসোর্ট বানাতে।


পারমিতার কথা মতই অরিত্র শান্তিনিকেতনে আছে জগন্নাথ দার সাথে কথা বলতে। আর জগন্নাথ দা অরিত্র কে বলে যে আদিত্য নারায়ন তার জন্য একটা চিঠি রেখে গেছে।


এরপর জগন্নাথ অরিত্র কে এসেছে চিঠিটা দিতেই অরিত্র যেন খুব ইমোশনাল হয়ে পড়ে এবং সে পড়ে বুঝতে পারে বাবা ভালোবেসে এই বাড়িটা জগন্নাথ দাকে দিয়ে গেছে। এবং কোনোভাবেই যেন এই বাড়িটা সে না নেয় ।


জগন্নাথ দার কাছ থেকে। এরপর পরপরই পারমিতা অরিত্র কে ফোন করলে অরিত্র বলে পারমিতা যদি রিসার্চ করতে চায় তাহলে সে শান্তিনিকেতনে অন্য জায়গায় জমি কিনে দেবে কিন্তু এই বাড়ি সে কোনভাবেই জগন্নাথ দার কাছ থেকে নেবে না।

৮.সেদিন মধ্যরাতে :
ক্লাসে সাবর্ণ কে নিয়ে খুব হাসাহাসি হয়। এর কারণ ওর মা তার গুরুদেবের কথামতো সাবর্ণর হাতে কব্জিতে আর আঙুলে নানা রকমের আংটি তাবিজ পরিয়ে রাখে। সাবর্ণর মায়ের বিশ্বাস যে শ্রাবণ্য প্রতি বছর স্কুলে যে ভালো রেজাল্ট করে তার পেছনে তার গুরুদেবের দেওয়া এই আংটি আর তাবিজেরই কেরামতি বেশি।এক ছেএক ছেলের কাহিনী

A 28 year boy selling flower in shop
এক ফুল বিক্রেতা ছেলে আর তার সংসার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার গল্প

একটা সদ্য বিবাহিত ছেলের জীবনে তার প্রাক্তন প্রেমিকার ছাড়া (

অর্পিতা সরকার এর জনপ্রিয় উপন্যাস জীবন স্রোতের আঁকে বাঁকে এর পর্যালোচনা -Review of Arpita Sarkar’s popular novel Jeevan Sroter Ake Banke

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to top