আমার ব্লগ এ তোমাদের সবাই কে স্বাগত। আজকে কথা বলব অর্পিতা সরকার এর লেখা জীবন কেন্দ্রিক উপন্যাস “জীবন স্রোতের আঁকে বাঁকে কে নিয়ে”।
পুরো উপন্যাস এ পনেরো টা গল্প আছে। আর প্রত্যেক টা গল্পই ভিন্ন স্বাদের। এখানে যেমন প্রতিশোধের গল্প আছে, তেমনি আছে ভালবাসা, মায়া আর আবেগ এবং
অনুশোচনা এর গল্প। আছে একদম তোমার আমার মত নিম্ন মধ্যবিত্ত একটা ছেলের দামী আইটি চাকরি ছেড়ে নিজের স্বপ্নের ক্যাফে তৈরি করার গল্প। তাহলে চলো শুরু করা যাক।
প্রথম গল্পটা হচ্ছে –প্রতিশোধ:
পাঁচজন বন্ধুকে নিয়ে -যে পাঁচ জন বন্ধুর নাম-প্রদীপ্ত, সপ্তর্ষি, সৃজন, দেবমাল্য ,আর রুদ্রনীল তারা একই স্কুলের ছাত্র,-প্রথমে খুন হয় শুধু প্রদীপ্ত,
তারপর সপ্তর্ষি, স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ দেবমাল্য সৃজন আর রুদ্রনীল কে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।

তাদের তিনজনকেই থানাতে ডেকে পাঠান থানার ওসি সৌমিত্র বাবু। ঠিক থানায় আসার আগেই খুন হয় দেবমাল্য। এরপরে সৃজন আর রুদ্রনীল অফিসার সৌমিত্র বাবুকে বলেন সুনয়ন বলে একটা ছেলের কথা।,
এই ছেলেটা ওদের সাথে স্কুলে পড়তো। সুনয়ন ছিল মূলত গরিব পরিবারের ছেলে। কিন্তু পড়াশোনায় তুখোরক্লাসে ও সব সময় ফাস্ট হত। এইদিকে এই পাঁচ বন্ধুর খুব হিংসে হয়েছিল , এবং
তাই ওরা একবার সুনয়নকে ইচ্ছা করে ভুল পরীক্ষার রুটিন দিয়েছিল এবং সেই রুটিন ফলো করেই সুনয়ন পরীক্ষায় ফেল করে। ওদের দাবি সুনয়ন এই হত্যাগুলো করছে ওর বদলা নেওয়ার জন্য।

ওদের কথা মত সুনয়ন কে বাড়ির থেকে তুলে নিয়ে আসে এবং কস্টাডি তে দুদিন রাখে।যাতে বাকি দুজনের খুন আটকানো যায়। কিন্তু অদ্ভুতভাবে বাকি দুটো ছেলে সৃজন আর রুদ্রনীল খুন হয়। ,
পুলিশ বুঝতে পারে যে এই খুন গুলো সুনয়ন করছে না । সুনয়ন কে ছেড়ে দেয়, সুনয়ন আনন্দে মিষ্টি কিনে বাড়ি ফেরে, । গল্পটা এতোটা একদম সাদা মাটা , কিন্তু টুইস্ট আসে এই খানে,। বাড়িতে গিয়ে ও দেখতে পায় ওর বাবা আর অর প্রেমিকা কে।
ওর প্রেমিকা তখন জল দিয়ে রক্তে মাখা জামা ধুচ্ছিল, ওর প্রেমিকা রেশমিকে একটাই কথা জিজ্ঞেস করল বাবার আজকে কোন অসুবিধা হয়নি তো রেশমি আত্মবিশ্বাসের সাথে উত্তর দিল আচ্ছা বাবার সাথে আমি ছিলাম।
সুনয়নের বাবা শিবনাথ পাল দীর্ঘদিন বিএসএফে চাকরি করেছেন। কিন্তু ডিউটির সময় জঙ্গিদের সাথে গুলি লেগে ওনার নিচের পা দুটো বাদ যায় । আর সুনয়ন এর মা অনেকদিন আগে ক্যান্সারে মারা গেছে,
তাই সুনয়নের প্রেমিকা রেশমীকে সম্বল করিয়ে জীবন কাটছে ওর বাবার।এই রেশমির সাথে সুনয়নের পরিচয় হয় একটা পড়ার ব্যাচে, দুজনের লক্ষ্য একই রকম ছিল একদম মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলেমেয়ে হয় তাদের চাকরি পেতে হবে।https://selfknowledgepro.com/wp-admin/edit.php
2 .দ্বিতীয় গল্প ঘরোয়া
এই গল্পটা লেখা হয়েছে, দুজন প্রবীণ নাগরিক কে নিয়ে, প্রথমজন উদয় চক্রবর্তী আর উনার স্ত্রী মিনতি। উদয় তার স্ত্রী মিনতিকে একটা ভালো বৃদ্ধাশ্রমে রাখতে চায় যেখানে মিনতি তার বাকি জীবনটা সুন্দরভাবে কাটাতে পারবে।

সেখানে এসে আলাপ হয় শ্রাবণী নামে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যিনি এই বৃদ্ধাশ্রম টা চালান।শ্রাবণী উদয় বাবু কে দেখে ওনাকে আতিথেয়তা জানিয়ে বললেন তার এই বৃদ্ধাশ্রম মায়ার বাঁধন একেবারে ঘরোয়া পরিবেশের মত।
আর এই ঘরোয়া কথাটাতেই ভীষণ আপত্তি উদয় বাবুর।শ্রাবণী খুব ইন্টারেস্টিং লাগে ব্যাপারটা। তাই শ্রাবণী উদয় বাবুর কাছে পুরো ঘটনাটা শুনতে চায়।
উদয়বাবু খুব ইন্টারেস্ট নিয়ে ধীরে ধীরে শ্রাবণীকে বলতে থাকে কিভাবে ওনার সাথে উনার স্ত্রীর আলাপ হয়েছিল এবং সেখান থেকে বিয়ে এবং তারপরে সংসার।
উদয় বাবু আরো বললেন কিভাবে ওনার বাবা বিশ্বরূপ চক্রবর্তী সম্বন্ধ করে মিনতি এর সাথে ওনার বিয়ে দিয়েছিল। আর মিনতিও কিভাবে বিয়ের পর নিজেকে আপ্রাণ ঘরোয়া করার চেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
নিজের হাঁটাচলা শিক্ষা দীক্ষা সবকিছুতেই মিনতি আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছে নিজেকে ঘরোয়া প্রমাণ করতে।
এই ঘরোয়া প্রমাণ করতে গিয়েই নিজের ভালো থাকাটাই আর নিজের ভালো লাগা গুলোকে কখন যেন বিসর্জন দিয়ে ফেলেছে মানুষটা। তাই উদয়বাবু জান মানুষটা যেন তা সাজানো সংসদ ছেড়ে শেষ বয়সটুকু একটু প্রাণ খুলে বাঁচে।https://selfknowledgepro.com/wp-admin/edit.php
উদয় বাবুর কাছে সবটা শুনে খুব ভালো লেগেছিল শ্রাবণীর। তাই শ্রাবণী, প্রথম দিনই উদয় বাবু আর ওনার স্ত্রী মিনতিকে থাকার জন্য একটা ভালো ঘর দিয়েছিল এই বৃদ্ধাশ্রমে ।
এবং বৃদ্ধা মিনতিকে দায়িত্ব দিয়েছিল ওই বৃদ্ধাশ্রম এর বাগান পরিচর্যা করার। এরপরে যত দিন যায় উদয় বাবু দেখতে থাকলো, মিনতি যেন আস্তে আস্তে ওই বৃদ্ধাশ্রমে প্রাণ খুলে বাঁচতে শুরু করেছিল যেভাবে উদয় বাবু নিজের স্ত্রীকে দেখতে চেয়েছিলেন।
3.রাঁধুনি –
বাড়ির একমাত্র ছেলে অতনু এবার থেকে হোস্টেলে গিয়ে থাকবেএটাই ওর বাবার সিদ্ধান্ত। তিন দিদির পরে অতনু একমাত্র ছেলে ওই বাড়ির তাই স্বাভাবিকভাবেই ও সবার আদরের।
তাই বাবা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ছেলে এতটা আদরে থাকলে আর এত আবদারে থাকলে কিছুতেই মানুষ হবে না তাই তাকে,
হোস্টেলে পাঠাতেই হবে। ওদের বাড়িতে প্রতিদিনই খুব সুন্দর সুন্দর রান্না হয়। এক কথায় ওদের ফ্যামিলি পেটুক ফ্যামিলি।
এই সুন্দর সুন্দর খাবার ছেড়ে এবার ওকে হোস্টেলে গিয়ে সেই ম্যার মেরে খাবার খেতে হবে। এইটা ভেবে যেমন অতনু খারাপ লাগছে তেমনি ওর সদ্য রামায়ণ পড়া ,
শেষ করেছে তাই ওর এই হোস্টেলে যাওয়াটা অনেকটাই ওর কাছে রামায়ণের রামের মতো বনবাসে যাওয়া। কিন্তু তবুও তাকে যেতেই হবে।

হোস্টেলে গিয়ে অতনুর আলাপ হয় নতুন বন্ধু দের সাথে।
প্রথম দিন হোস্টেলে নিজের রুমে গিয়ে অতনু দেখতে পায় যে ওর জন্য আর পাঁচটা ,
ছেলের মতোই ছোট একটা ছোট খাট রাখা ওর জন্য। ওকে যে রুম এ থাকতে দেওয়া হয়েছে, সেই রুম এ ওর সাথে আরও দুটো ছেলে আছে।
দুটো ছেলে তো অতনু কে দেখে ওর দিকে কীরকম ভ্যাবলার মত প্রথমে তাঁকিয়ে ছিল, অতনু ঠাকুমা আর মা বাড়ি থেকে ওর জন্য যা যা ভালো খাবার পাঠিয়ে ছিল,
অতনু সুটকেস খুলতেই সেই সব খাবার এর উপর ঝাপিয়ে পড়ে ওরা, যেটা খুব বিরক্তিকর লাগে ওর।
তারপর ওর বন্ধুরাই ওকে নিয়ে যায় হোস্টেল এর গ্রাউন্ড ফ্লোর এ যেখানে ওদের বিকেলের খাবার দেয়।
এখানে গিয়ে ওর আলাপ হয় বেলা মাসির সঙ্গে। সেখানে গিয়ে অতনু পড়ে আরেক বিপদে। মাসি এমন সব খাবার খেতে দেয় যে গুলো ওর অপছন্দের।
ওর পাতে ওর অপছন্দের খাবারগুলো পড়তেই নিমেষের মধ্যেই ওর হোস্টেলের বন্ধুরা শেষ করে দেয়। এইভাবে টানা তিন সপ্তাহ কাটার পর অতনু স্কুল ছুটি হয়, হোস্টেল থেকে অতনু বাড়িতে আসে।
অতনুকে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যায় ওর জেঠিমা, যে ছেলেটা নাদুস নুদুস ভাবে হোস্টে লেগেছিল সে একদম রোগা হয়ে গেছে। এরপরে অতনুর কাছ থেকে হোটেলের খাওয়া-দাওয়া সব খুঁটিনাটি খবর জানতে থাকে ও জেঠিমা।
সব জেনে অতনু জেঠিমা অতনুকে একটা ডায়েরী দেয় যার মধ্যে সব সুন্দর সুন্দর খাবারের রেসিপি আছে এবং সেটা অতনুকে হোস্টেলে গিয়ে ,
ওর বেলা মাসিকে দিতে বলে। জেঠিমার কথা মতে অতনু ছুটি কাটিয়ে হোস্টেলে গিয়ে বেলা মাসিরাতে জেঠি রান্নার ডায়েরিটা দেয়।
যদিও তাতে কোন লাভ হয়নি। বেলা মাসি সেই আগের মতই সেই একই মসলা সব তরকারিতে দিয়ে রান্না করে। তবে অতনুর এখন আর অসুবিধা হয় না ওর এই খাবারটা অভ্যাস হয়ে গেছে |
৪.পাত্রীপক্ষ:
বছর তিরিশ এর বাঙালি ছেলে পার্থ বর্মন বিয়ে করবে ঠিক করেছে। সেই সৌজন্যেই দেখতে গেছে বছর ছাব্বিশ এর মেয়ে প্রীতিলতা কে। প্রথমে পার্থ একটু লজ্জাবোধ করলেও, প্রীতলতার কাছে তার শখের কথা জানতে চাইলো ।
প্রীতিলতা বললো সে বই পড়তে খুব ভালোবাসে। এরপরে আস্তে আস্তে প্রীতিলতার সাথে পার্থর বন্ধুত্ব হতে লাগলো। প্রীতিলতার কাছ থেকে ও জানতে পারলো যে ওদের পরিবারে সবার নাম কোন না কোন স্বাধীনতা বিপ্লবীদের নামে।

যেমন মেজো মামার নাম বিনয় ছোট মামার নাম রাসবিহারী। আর প্রীতিলতার বাবার নাম ক্ষুদিরাম। আর মায়ের নাম লক্ষী। সেটা অবশ্যই লক্ষী বাই এর নাম অনুকরণে।
এরপর প্রীতিলতা একটু ব্যক্তিগত কথা বলার জন্য পার্থ কে নিয়ে ওদের বাড়িরই একটা অন্য ঘরে যায়।
যদিও পার্থ একদম অচেনা একটা মেয়ের সাথে প্রথমবার একটা আলাদা ঘরে এসে ভীষণ অপ্রস্তুত বোধ করতে শুরু করে।
নিজের ছেলেকে দেখতে পেয়ে ছুটে যায় বর্ণালী ব্যানার্জি। আর সেই সময় হাতে লাঠি নিয়ে একদম রোগাটে দুটো লোক সুদর্শন ব্যানার্জিকে চেপে ধরে।
তারপরে সুদর্শন আর বর্ণালী টিপাই কে নিয়ে পালাতে সক্ষম হলেও দুজনেই জ্ঞান হারায়।
জ্ঞান ফিরতেই তারা ওখান থেকে পালিয়ে একটা হোটেলে গিয়ে ওঠে। আর ছোট্ট টিপাই কে নিয়ে যায় ডাক্তারের কাছে।
আর সেই ডাক্তারকে সব ঘটনা বলার পরেই জানতে পারে ওই জমিদার বাড়িতে এক রানী মা না হতে পারার জন্য
অবসাদে ভুগে, ওই বাড়ি জমিদার ও তার নর্তকীকে হত্যা করে। আর তাদেরই অতৃপ্ত আত্মা এখনো ওইখানে ঘুরে বেড়ায়।
পার্থকে একদম চুপচাপ থাকতে দেখে প্রীতিলতাই বেশ অদ্ভুত রকমের প্রশ্ন করতে শুরু করে যাতে পার্থ যেন আরো অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে, যেমন ও ব্যাংকে সুন্দরী মেয়েদের দিকে তাকায় কিনা,
বন্ধুদের মধ্যে সুন্দরী মেয়েদের নিয়ে আলোচনা হয় কিনা, এইসব। পার্থ বুঝতে পারে প্রীতিলতা তার সাইকোলজিক্যাল টেস্ট নিচ্ছে। শুধু তাই নয় প্রীতিলতার সাইকোলজিক্যাল টেস্ট এর কাছে পার্থর আগেও দুজন হেরে গেছে।
পার্থ ঠিক করে ও প্রীতিলতার সাথে বাইরে কোথাও দেখা করবে। সেইমতো একদিনপ্রীতিলতা পার্থর ব্যাংকে গিয়ে উপস্থিত হয়।
পার্থ তো দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায়।
এরপর ওরা দুজন একটা ক্যাফে তে গিয়ে বেশ খানিকক্ষণ সময় কাটায়। তারপর পার্থ প্রীতিলতাকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে যায়। পার্থ বাড়ি গিয়ে মা-বাবাকে জানায় তার প্রীতিলতাকে পছন্দ হয়েছে।
ডাক্তার পরিষ্কার জানিয়ে দেয় নীলাঞ্জন ধীরে ধীরে অন্ধ হয়ে যাবে। এরপরে নীলাঞ্জন নিজের বোনের চোখ দিয়েই সব দেখতে শুরু করে।
কোথাও ঘুরতে গেলে ওর বোন চারিদিকে যা দেখতো তাই দাদার কাছে পরিষ্কার করে বলতো। আর দাদা নীলাঞ্জন সেই শুনেই খুশি থাকতো।
৫.সপ্তসুর-
এই গল্প শুরু হয় রক্তিমা সান্যাল নামে একজন উঠতি গায়িকাকে নিয়ে। রক্তিমা সল্টলেক এর বাড়িতে একাই থাকে ওর হাজবেন্ড শুভ্রর সাথে।
এইরকম একদিন হঠাৎ করেই মাঝ রাত্রি বেলা রক্তিমার কাছে ফোন আসে ,
যে ওর হাজবেন্ড শুভ্র একটা বড় অ্যাক্সিডেন্ট হয়েছে। শুভ্র কে যে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেই হাসপাতালের খোদ ডাক্তারি রক্তিমাকে ফোন করে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে আসতে বলে।
মধ্য রাতের মধ্যে ঘুম চোখে রক্তিম বেশ কিছুটা ঘাবড়ে যায়। ও বুঝতে পারে না এখন কাকে ফোন করবে? শুভ্রোর অফিসের কলিগদের নাকি শুভ্র ওর মা-বাবাকে। কোন কিছু বুঝতে না পেরে ওই গাড়ি নিয়ে নার্সিংহোমের দিকে রওনা হয়।
শুভ্র সাথে ওর আলাপ হয়েছিল একটা মিউজিক লঞ্চ পার্টিতে। শুভ জানিয়ে ছিল ও রক্তিমার ঠিক কত বড় ভক্ত। এমনকি শুভর ফোনেও রক্তিমার গলার গান রিংটোন করে রাখা।

শুভ ব্যাঙ্গালোরে একটা তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় চাকরি করত। বর্তমানে কলকাতায় ফিরে এসেছে একটা মিউজিক কোম্পানিতে ইনভেস্ট করেছে। এই মিউজিক কোম্পানির হয়ে একের পর এক হিট গান গেয়ে সফলতার চূড়ায় ওঠে রক্তিমা।
এরপরে শুভ্র আর রক্তিমার বিয়ে হয়। সেই বিয়ে তো উপস্থিত হয় টলিউডের নানা সেলিব্রেটিরা। কিন্তু এই দুর্ঘটনাই রক্তিমার সবকিছু ভেঙে চড়ে গুড়িয়ে দেয়।
হাসপাতালে ওর জন্য যে এত বড় একটা আঘাত অপেক্ষা করে রয়েছে সেটাও বুঝতেই পারিনি। হাসপাতালে পৌঁছেই ও শুভ্রর খোঁজ করতে থাকে।
ডাক্তার এসে জানায়, শুভ্রের ইন্টারনাল একটু হেমারেজ হয়েছে তাই জন্য ওটি করতে হবে । তাই রক্তিমাদের ডাক্তারের কথা মত কন্সেন্ট পেপারে সই করে দেয়। অপারেশন সাকসেসফুল হওয়ার পর শুভ্র জ্ঞান ফেরা পর্যন্ত রক্তিম অপেক্ষা করতে থাকে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই শুভ্রোর জ্ঞান ফিরতেই রক্তিম ওকে দেখে রীতিমতো অবাক হয়ে যায়। এটা আসলে শুভ্রই না এটা দিব্যজ্যোতি। এই দিব্যজ্যোতির সাথে রক্তিমার আলাপ হয়েছিল রিয়েলিটি শো তে।
হঠাৎ দিব্য জ্যোতি কেন রক্তিমাকে তার স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিল এই নার্সিংহোমে এসে। এই কথা ভাবতে ভাবতেই নার্সিংহোমের বাইরে এসে রক্তিমাও ফোন করলো শুভ্রকে। শুভ্র ফোন ধরার আগেই একজন রিপোর্টার ওখানে এসে উপস্থিত হলো এবং
রক্তিমাকে ওর নানা ব্যক্তিগত ব্যাপার নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকলো। এরই মধ্যে শুভ্র ওকে ফোন করলো। শুভ্রের ফোন ধরেই ও বুঝতে পারল শুভ্র সবকিছু জেনে গেছে।
রক্তিমার রীতিমতো চিৎকার করে ফোনে শুভ্র কে বোঝাতে থাকল যে এটা একটা ট্র্যাপ ওকে ঠকানো হচ্ছে ,
দিব্যজ্যোতি কেন যে ওর সাথে এটা করল সেটা জানার জন্য ও আর একবার ছুটে গেল দিব্যজ্যোতির কাছে। ততক্ষণে জ্ঞান এসেছে দিব্যজ্যোতির। রক্তিমা যা ভেবেছিল ঠিক সেটাই হলো। দিব্যজ্যোতি এসেছে রক্তিমার উপর বদলা নিতে।
দিব্যজ্যোতির সাথে রক্তিমার আলাপ হয়েছিল একটা রিয়ালিটিশো তে। দুজনের মধ্যে কম্পিটিশন ছিল তুঙ্গে। বরং বলতে গেলে দিব্যজ্যোতি রক্তিমার থেকে কয়েকটা,
এপিসোডে এগিয়েই ছিল। রক্তিমা জানত ওকে যদি জিততে হয় তাহলে এই রিয়েলিটি শো থেকে দিব্যজ্যোতিকে সরাতেই হবে।
তাই ও সাথে সাথে ওর মাথায় একটা একটা ফন্দি করে। দিব্যজ্যোতির দীর্ঘদিনের প্রেমিকা শুভেচ্ছা কে ও কয়েকটা সেলফি দেখায় যেখানে দিব্যজ্যোতি আর রক্তিমা খুব ঘনিষ্ঠভাবে আছে । দিব্য জ্যোতির প্রেমিকা শুভেচ্ছা কোনভাবেই এই দাগকাটা সামলাতে পারিনি।
তাই সে আত্মঘাতী হয়। আর নিজের প্রেমিকা কে হারিয়ে দিব্যজ্যোতি কেন অবসাদে চলে যায়। ডিপ্রেশন এমনভাবে দিব্যজ্যোতিকে গ্রাস করে যে ও গানের জগত থেকেই চিরকালের মতো ঝরে যায়।
আর শেষমেষ সেই রিয়েলিটি সাথে রক্তিমা জয়ী হয়।
তবে এই ছোট গল্পের টুইস্ট অপেক্ষা করছে গল্পের একদম শেষ কটা লাইনে। একদম শেষে দেখা যায় এই দিব্যজ্যোতি হচ্ছে শুভ্র র ভাই। ,
আর শেষমেষ শুভ্রই দিব্যজাতিকে তার মিউজিক কোম্পানির সম্পূর্ণ দায়িত্ব দেয়। আর রক্তিমাও বুঝতে পারে শুভ্রই তার ভাইয়ের প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য এতদিন ওর সাথে ভালোবাসার কি সুন্দর নিখুঁত অভিনয়টা করে গেছে।
রক্ত গোলাপ: এই গল্প লেখা হয়েছে মূলত পূবালী আর নিশান কে নিয়ে। দুজনেই সদ্য বিয়ে করেছে। পূবালী ঘরের বউ হল নিশান একটা ফুলের দোকান চালায়।
দুজনের সংসার জীবন ভালোই চলছিল কিন্তু হঠাৎ করেই যেন তাদের দুজনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। একে অপরকে সন্দেহ করতে থাকে।
এরপর তারা দুজনে তাদের নতুন বাড়িতে অপর কারোর উপস্থিতি লক্ষ্য করতে শুরু করে। সেটা কেউ না, একটা ব্যাপারটা যে প্রতিশোধ নিতে চায়। যার নাম রুমেলা।
এই রুমেলা একসময় ভালবাসতো নিশানকে।

কিন্তু নিশান তাকে এড়িয়ে গেছিল। যদিও রুমেলা অপর একটা ছেলেকে ভালবাসে তাকে বিয়ে করে। কিন্তু সেই সংসার ও ভেঙ্গে যায়। তাই রুমেলা বিশ্বাস করে নিশান যদি ওর ভালবাসাকে মেনে নিত তাহলে ও আর নিশান একসাথে সংসার করতে পারত।
অবশেষে বাধ্য হয়ে নিশান এক তান্ত্রিকের সাহায্য নেয়। সেই তান্ত্রিক নিশান কে একটা ছোট রজনীগন্ধা ফুলের মালা রুমেলা শ্বশুরবাড়ির ঘরে রেখে আসতে বলে।
নিশান রীতিমতো নিজের জীবন বাজি রেখে এই কাজটা করে আর অবশেষে রুমেলা ওদেরকে ছেড়ে চলে যায়।

৬ভোরের স্বপ্ন::
ঘুমের মধ্যে মাঝে মাঝেই দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেঙ্গে যায় অনির্বাণের। ওর সব সময় মনে হয় কেউ যেন ওকে ধরার চেষ্টা করছে কেউ যেন ওকে তাড়া করছে। এই নিয়ে ওর স্ত্রী দীপিকা খুবই চিন্তিত।
আর ওর ছেলে অরিত্র তো রাত্রে বেলা বাবার এই কান্ড দেখে ঘুম থেকে উঠে বাবার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে। দীপিকা এরপর অনির্বাণকে একজন সাইক্রেটিক ডক্টর এর কাছে নিয়ে যায়।

সেখানে কি দীপিকা জানতে পারে অনির্বাণ স্কুল লাইফে ক্লাস নাইন থেকে টেনে ওঠার সময় অংকে ফেল করেছিল । এরপরই বাবা তাকে শম্ভু চরণ নামে ওর স্কুলেরইএক অংকের শিক্ষকের কাছে ভর্তি করে দেয়।
ধীরে ধীরে অনির্বাণের অংকে ভয় কাটতে থাকে এবং অনির্বাণ মাধ্যমিকে খুব ভালো রেজাল্ট করে। কিন্তু সেই শিক্ষকের নামে মিথ্যে প্রচার করা অনির্বাণ। শিক্ষক নাকি একমাত্র স্কুলে ভালো না পড়ে প্রাইভেট স্টুডেন্টদেরই ভালো পড়ায়।
এই অপমানে খুব শম্ভুচারণ ট্রান্সফার নিয়ে অন্য স্কুলে চলে যায়। আর এত বছর পর সেই শম্ভুচারণ শিক্ষকই এসছে অনির্বাণের স্বপ্নে।। অনির্বাণ বুঝতে পেরেছিল ওর ছেলেও ওর মত অংকে দুর্বল।
দীপিকা এই ঘটনা জানতে পেরে ঠিক করে অনির্বাণকে ওর পুরনো শিক্ষক শম্ভু চরণের কাছে নিয়ে যাবে। সেইমতো দীপিকা অনির্বাণকে ওর শিক্ষক শম্ভু চরণের কাছে নিয়ে যায়।
শম্ভু চরণ কে দেখেই রীতিমত ভেঙে পড়ে অনির্বাণ এবং স্যারের নাম বদনাম করার জন্য অনির্বাণ ও শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চায়। যদিও শম্ভু চরণের আর কিছুই মনে নেই।, অনির্বাণকে একজন কলেজের প্রফেসর হতে দেখে শম্ভু চরণ বেজায় খুশি।
শম্ভু চরণ যখন জানতে পারে যে অনির্বাণের ছেলেও ওর মত অঙ্কে দুর্বল তখন সে খুশি হয়ে বলে তার ছেলের অংকে ভয় কাটানোর দায়িত্ব তার। আর এখানেই যেন মুক্তির স্বাদ পায় অনির্বাণ।
৭.সোনাঝুরিতে বৃষ্টি নামলো :
আদিত্য নারায়ন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তার এক ছেলে আর এক মেয়ে অরিত্র আর আত্রেয়ী। বড় মাপের ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য তার সম্পত্তির কিছু কম ছিল না। স্ত্রীর মৃত্যুর পর ছেলে মেয়েকে একাই মানুষ করেছেন তিনি ।

আইসক্রিম আর সিমেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি শান্তিনিকেতনে একটা বাড়ি কিনে রিসোর্ট তৈরি করেন আদিত্য নারায়ন সেখানে মাঝে মাঝে ছুটি কাটাতে আসবে বলে। আর এই রিসোর্টের দায়িত্ব আদিত্য নারায়ন দিয়ে গেছিল জগন্নাথের হাতে যাকে,
সে নিজের ছেলের মতোই দেখতো। আদিত্য নারায়ন মারা যাওয়ার পর তার সম্পত্তি সমানভাবে দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে ভাগ করে দিলেও তার শান্তিনিকেতনের সেই বাড়ি দিয়ে যায় জগন্নাথের নামে।
আর এই শান্তিনিকেতনের বাড়িতেই রিসোর্ট বানানোর ইচ্ছা ছিল আদিত্য নারায়নের ছেলে ওর অরিত্র স্ত্রী পারমিতার।
পারমিতা খুব আপসেট হয়েছিল যখন সে জানতে পারে তার শশুর বাড়িটা অন্য লোকের নামে লিখে দিয়ে গেছে। পারমিতা চেয়েছিল ওই বাড়িটাকে একটা রিসোর্ট বানাতে।
পারমিতার কথা মতই অরিত্র শান্তিনিকেতনে আছে জগন্নাথ দার সাথে কথা বলতে। আর জগন্নাথ দা অরিত্র কে বলে যে আদিত্য নারায়ন তার জন্য একটা চিঠি রেখে গেছে।

এরপর জগন্নাথ অরিত্র কে এসেছে চিঠিটা দিতেই অরিত্র যেন খুব ইমোশনাল হয়ে পড়ে এবং সে পড়ে বুঝতে পারে বাবা ভালোবেসে এই বাড়িটা জগন্নাথ দাকে দিয়ে গেছে। এবং কোনোভাবেই যেন এই বাড়িটা সে না নেয় ।
জগন্নাথ দার কাছ থেকে। এরপর পরপরই পারমিতা অরিত্র কে ফোন করলে অরিত্র বলে পারমিতা যদি রিসার্চ করতে চায় তাহলে সে শান্তিনিকেতনে অন্য জায়গায় জমি কিনে দেবে কিন্তু এই বাড়ি সে কোনভাবেই জগন্নাথ দার কাছ থেকে নেবে না।
৮.সেদিন মধ্যরাতে :
ক্লাসে সাবর্ণ কে নিয়ে খুব হাসাহাসি হয়। এর কারণ ওর মা তার গুরুদেবের কথামতো সাবর্ণর হাতে কব্জিতে আর আঙুলে নানা রকমের আংটি তাবিজ পরিয়ে রাখে। সাবর্ণর মায়ের বিশ্বাস যে শ্রাবণ্য প্রতি বছর স্কুলে যে ভালো রেজাল্ট করে তার পেছনে তার গুরুদেবের দেওয়া এই আংটি আর তাবিজেরই কেরামতি বেশি।এক ছেএক ছেলের কাহিনী

এই সাবর্নর স্কুলের সব থেকে কাছের বন্ধু হল রিতম। রিতমের কাছে সব কথা খুলে বলে সাবর্ণ। এরই মধ্যে সাবর্ণ জানতে পারে যে ওদের বাড়িতে ওর মায়ের সেই গুরুদেব আসবে। তাই জন্য ওর মা ওদের বাড়িতে যে ঘরে ওর দাদু সুবর্ণনারায়ন চ্যাটার্জি থাকতো সেই ঘর পরিষ্কার করা শুরু করেছে।

সাবর্ণ জানত ওই ঘরে মাঝে মাঝে নাকি ওর দাদুর ভূত কেউ দেখতে পাওয়া যায় , তাও গুরুদেব এসে ওই ঘরেই থাকবে । তারমধ্যে ওর বাবাও বলে দিয়েছে যে অফিসের কাজে চেন্নাই যাবে।রিতম এই কথা জানতে পেরে বলে ভিতরে ভিতরে রীতম ওর দাদা সঞ্জীবন এর সাথে হাত মিলিয়ে ঠিক করে ওই গুরুদেবকে শায়েস্তা করবে। কিন্তু ওরা সেটা ওর বন্ধু সাবর্ণ কে জানাবেনা।
এরই মধ্যে বাড়ি ফিরে এসেছে সাবর্ণ। ঘরের সামনে এসে সাবর্ণ দেখতে পায় ইতিমধ্যে গুরুজি এসে গেছে। তারপর রীতিমত শুরু হয় সেই নাটক। Or মা সারাদিন ওই গুরুজির সেবাতেই নিজেকে লাগিয়ে দেয়, আর সাবর্ণ বাধ্য হয়ে ওকে মায়ের কথা মত চলতে থাকে।
এবং ঘটনা ঘটে রাত্রে বেলা, যখন সাবর্ণ কে হঠাৎ করে ডেকে পাঠায় গুরুদেব। মাঝ রাতের বেলা এই রকম ভাবে ডাকায় রীতিমত ঘাবড়ে যায় ও। সাবর্ণ কে অবাক করে দিয়ে ওর গলা থেকে আর হাত থেকে তাবিজ আর হাত থেকে সব আংটি খুলে নেয় ওর মায়ের গুরুদেব। গুরুদেবের আচরণে রিতিমত অবাক হয়ে যায় ।
যদিও ভিতরে ভিতরে খুশি হয় ও, ওর হাত আর গলা যেনো হালকা হয়। পরের দিন ও ওর সেই বন্ধুর থেকে জানতে পারে রাত্রে নাকি ওর দাদু ভূত হয়ে এসে গুরুজি কে ভয় দেখিয়ে গেছে যেনো ওর নাতির শরীর থেকে সব মাদুলি আর আংটি খুলে নেয়া হয়।
তবে সত্যিটা আরো বেশ কয়েকদিন পর সামনে আসে সবর্নোর। বাবার ঘরে আলমারিতে ও নকলগোঁফ দাড়ি আর দাদুর সেই ব্যবহার করার মত একটা লম্বা লাঠি দেখতে পায়। ও বুঝতে পারে দাদু নয় সেদিন দাদু হয়ে দাদুর ভূত সেজে ছিল ওর বাবাই। মনে মনে বাবাকে ধন্যবাদ জানায় ও।
৯.হাইওয়ে তে:
দিকদর্শনপুরের ছেলেনিশান পেশায় একজন ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বয়স এখনো ৩০ পৌঁছায়ন।
এরই মধ্যে নিশান হঠাৎ সিদ্ধান্ত নিল যে ও এই কর্পোরেট এর মোটা মাইনের চাকরিটা ছেড়ে দেবে। একদম নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে পরিশ্রম করে নিশান এই জায়গায় উঠেছে স্বাভাবিকভাবেই নিশানের এই সিদ্ধান্তে খুশি হয়নি ওর কাকু আর ওর বাবা।
কারণ নিশান ওদের ফ্যামিলির একটা গর্ব। নিশান যখন বড় চাকরি পায় তখন ওরা সবাই খুশি ছিল। তবে নিশান সিদ্ধান্ত নিয়ে নিয়েছে ও ওর অন্নপ্রাশনে ওর দাদুর কাছ থেকে পুরস্কার হিসেবে পাওয়া হাই রোডের ধারে জমিতে একটা ক্যাফে বানাবে।
ক্যাফের নাম ও মনে মনে ঠিক করে ফেলেছে নিশান। ক্যাফের নাম হবে পথের পাঁচালী ।যে ক্যাফে টা হবে মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত সবার জন্য। আর এই কাজে ওকে সাহায্য করবে ওর পাড়ার ক্লাব ঝংকারের বন্ধুরা, যথাক্রমে নীলাভ, ঐশিক, সপ্তক আর রিয়ান।
এরমধ্যে মিলাবো ভালো গান গায় রিয়ান, ভালো রান্না করতে পারে। যদিও নিশানের আইডিয়াটা মোটেই ভালোভাবে নেয়নি প্রথমে ওর বন্ধুরা। যদিও পরে সবাই রাজি হয়। এক এক জনকে একটা দ্বায়িত্ব দেয় নিশান।
এর সাথে যুক্ত হয় সপ্তক এর স্ত্রীমুনমুন। মুন মুন খুব ভালো ছবি আঁকে তাই ওর দায়িত্ব হয় পথের পাঁচালী ক্যাফের ভেতরের ইন্টিরিয়ার এর।
দেখতে দেখতে পথের পাঁচালী ক্যাফে টা খুলে যায়। আর কিছুদিনের মধ্যে একটা ভালো অর্ডারও পেয়ে যায় নিশান। সবাই তার ক্যাফের প্রশংসা করতে থাকে। এই ক্যাফেতে এই হঠাৎ করে একদিন আসে একটা অচেনা মেয়ে, মেয়েটার নাম সুচরিতা।
সুচরিতার নীলাভোর গান খুব ভালো লাগে। আর মেয়েটাকে অবলা আর অসহায় বুঝতে পেরে ওকে থাকতে দেয় নিশান। সুচরিতা ওই ক্যাফেতে ওদের সাথে থাকতে থাকতেই ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায় আর সুচরিতা ওই ক্যাফেকে বড় করার জন্য আরো নতুন নতুন আইডিয়া দিতে থাকে।
কিন্তু হঠাৎ করে ওই ক্যাফেতে একদিন এসে হাজির হয় পুলিশ। পুলিশের অভিযোগ শুনে রীতিমতো অবাক হয়ে যায় নিশান। সে নাকি ক্যাফে ব্যবসার আড়ালে একটা মেয়েকে কিডন্যাপ করে এখানে লুকিয়ে রেখেছে।
যে মেয়েটার নাম সুচরিতা আর যে কলকাতার একটা দামী আইটি কোম্পানির এমডি এর মেয়ে। যদিও পড়ে সুচরিতা এসে নিজে স্বীকার করে যে ওকে কেউ লুকিয়ে রাখেনি,
এবং ওর বাবার চাপিয়ে দেওয়া ব্যবসা ওর ভালো লাগছিল না তাই ও চলে এসেছিল। এখানে নিশানের কোন দোষ নেই। অবশেষে সুচরিতা ফিরে যায় সেই নিজের যায়গায়। নিশান কে পুলিস ছেড়ে দেয় ।
10.রক্ত গোলাপ:::::::::::
এই গল্প লেখা হয়েছে মূলত পূবালী আর নিশান কে নিয়ে। দুজনেই সদ্য বিয়ে করেছে। পূবালী ঘরের বউ হল নিশান একটা ফুলের দোকান চালায়। দুজনের সংসার জীবন ভালোই চলছিল কিন্তু হঠাৎ করেই যেন তাদের দুজনের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। একে অপরকে সন্দেহ করতে থাকে।

এরপর তারা দুজনে তাদের নতুন বাড়িতে অপর কারোর উপস্থিতি লক্ষ্য করতে শুরু করে। সেটা কেউ না, একটা ব্যাপারটা যে প্রতিশোধ নিতে চায়। যার নাম রুমেলা।
এই রুমেলা একসময় ভালবাসতো নিশানকে।
কিন্তু নিশান তাকে এড়িয়ে গেছিল। যদিও রুমেলা অপর একটা ছেলেকে ভালবাসে তাকে বিয়ে করে। কিন্তু সেই সংসার ও ভেঙ্গে যায়। তাই রুমেলা বিশ্বাস করে নিশান যদি ওর ভালবাসাকে মেনে নিত তাহলে ও আর নিশান একসাথে সংসার করতে পারত।
অবশেষে বাধ্য হয়ে নিশান এক তান্ত্রিকের সাহায্য নেয়। সেই তান্ত্রিক নিশান কে একটা ছোট রজনীগন্ধা ফুলের মালা রুমেলা শ্বশুরবাড়ির ঘরে রেখে আসতে বলে। নিশান রীতিমতো নিজের জীবন বাজি রেখে এই কাজটা করে আর অবশেষে রুমেলা ওদেরকে ছেড়ে চলে যায়।

১১.অভিশপ্ত বাড়ি-
অভিনেত্রী বর্ণালী ব্যানার্জি দেবীপুরের একটা পোড়ো বাড়িতে যায় একটা সিনেমা শুটিং করতে। উনার সাথে ছিল ওনার আড়াই বছরের ছেলে পালিত ছেলে টিপাই। হঠাৎ করেই ওনার ছেলে ওই যেখান থেকে মিসিং হয়ে যায়।
বর্ণালী ব্যানার্জি কান্নায় ভেঙে পড়ে। পুলিশ আছে ওনাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। অভিনেত্রী বর্ণালীকে সাহায্য করতে এগিয়ে আছে সুদর্শন নামেন একজন পত্রিকার সাংবাদিক।
বর্ণালী ব্যানার্জি আর সুদর্শন যায় দেবীপুরের ওই পোড়াবাড়িতে হারিয়ে যাওয়া ছেলেকে খুঁজতে। বাড়ির ভেতরে ঢুকেই ওরা পাজামা আর ঢোলা পাঞ্জাবি পরা একজন একদম বয়স্ক লোককে দেখতে পায় । সেই লোকটা মুখের উপর বর্ণালী ব্যানার্জি আর সুদর্শনকে বলে তাদের ছেলে আর তাদের সাথে যাবে না সে অন্য কারোর কাছে আছে।
এরপরে ওই বাড়ির দোতলা থেকে গানের আওয়াজ শুনতে পায় বর্ণালী ব্যানার্জি আর সুদর্শন। ওরা উপরে উঠে এক অচেনা মহিলার কোলে টিপাই কে দেখতে পায়। মহিলার পরনে ছিল শাড়ি আর হাতে ছিল গয়না। আর মহিলার কোলে ছিল টিপাই।
১২.ছেলে পোতা শ্মশান:::::::::;;;;;;
গ্রামের একদম সরল সাদা , বোকা ছেলে মানিক। বাবা সাথে সম্পর্ক ভালো না তাঁর, তাই বাবার থেকে একটু দূরে দূরেই থাকে মানিক। তাই মা ই ওর সব।পড়াশুনায় খারাপ হওয়ার জন্য টেনে টুনে মাধ্যমিক পাস করে ও।
তারপরে ওর জীবন থেকে ওর মাও চলে যায়। টাকার জন্য ওর এক কাকার সাহায্য নিয়ে গুজরাটে সোনার কাজে চলে যায় মানিক। সেখান থেকে টাকা পাঠাতো ও বাবাকে।
বাবার মানিকের বিয়ে দেওয়াতে আপত্তি থাকলেও ওর জেঠু বাসন্তী বলে একটা মেয়ের সাথে মানিকের বিয়ে দেয়। বাসন্তী মানিক কে যত্ন ও ভালবাসতে শুরু করে।
মানিক যতবার গুজরাট থেকে আসতো ততবার ভাষণটির জন্য নতুন নতুন জিনিস কিনে নিয়ে আসতো।
এরমধ্যে অন্তঃসত্ত্ব হল মানিকের বউ বাসন্তী। আর মানিকের বাবা অসুস্থ হয়ে বমি করতে করতে মাত্র দশ দিনের মধ্যেই মারা গেল। কিন্তু মানিকের প্রথম বাচ্চা হওয়ার মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় সেই সন্তান মারা গেল। আর মানিক শেষ মৃত সন্তানকে ওদেরই একটা গ্রামের গাছের তলায় পুতে দিয়ে এলো।
এইভাবে এক এক করে বাসান্তি তিনটে বাচ্চা মারা গেল। বাসন্তী ভাবলো ওর শ্বশুর মৃত্যুঞ্জয় এর জন্য দায়ী, কারণ মানিক চলে যাওয়ার পর ওর শ্বশুর জোর করে ওর সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতো। যার জন্য ও শ্বশুর কে খাবারের মধ্যে একটু একটু করে বিষ মিশিয়ে মেরে দিয়েছিল।
১৩.আধার পুরের যাত্রী:::::::::::
গার্গী আর নীলাদ্রির এক ছেলে আর এক মেয়ে তাদের নাম নয়না আর নীলাঞ্জন। নীলাঞ্জন নয়না থেকে তিন বছরের বড়। বন্ধুদের সাথে ক্রিকেট খেলতে গিয়ে নীলাঞ্জন এর মাথার এমন এক জায়গায় বল লাগে সে ধীরে ধীরে দৃষ্টি হারাতে শুরু করে।
১৪. পরিচারিকা::
বর্ধমান থেকে কলকাতায় থাকতে আসা বছর ২৬ এর মেয়ে রাগিনি ফ্ল্যাটে কাজ করে 30 বছরের মেয়ে গুঞ্জা। গুঞ্জা হঠাৎ করে একদিন রাগিনির ফ্ল্যাটে তার অফিস এর কলিগ ও ক্লোজ ফ্রেন্ড স্বর্ণাবকে দেখে রীতিমত অবাক হয়ে যায়।
গুঞ্জার এই আচরণ রাগিনির অদ্ভুত লাগে। সেদিন গুঞ্জা কোন রকমের রাগিনীর ফ্ল্যাটের কাজ করে বাড়ি চলে আসে ।গুঞ্জার বাড়ি গিয়ে রাগিনী জানতে পরে রাগিনী জানতে পারে এই গুঞ্জা স্বর্ণভো দের ফ্ল্যাটে কাজ করতো। স্বর্ণাবর বাবা
বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে গুঞ্জা কে ধর্ষণ করে। এবং গুঞ্জা যাতে বলে না দেয় সেই জন্য গুঞ্জাকে ওদের ফ্ল্যাট থেকে চোরের অপবাদ দিয়ে বের করে দেয়।