হ্যালো ব্লগার খেতে তো আমরা একটু আধটু প্রায় প্রত্যেকেই ভালবাসি সেটা যেকোনো ধরনের খাবার হোক,
ভেজ কিংবা ননভেজ। আমরা প্রত্যেকেই একটু না একটু হলেও ভোজন রসিক আর তারপরে সেই খাবারটা যদি
বিরিয়ানি বা কাবাবের মত খাবার হয় তাহলে তো কথাই নেই। ভোজন রসিকদের কাছে এইসব খাবার তাদের পছন্দের তালিকার একদম শীর্ষে থাকে।
চলো তাহলে দেখে নেয়া যাক সেইসব খাবার যেগুলো মুঘলদের হাত ধরেই ভারতবর্ষের মানুষের কাছে পৌঁচেছে।
মুঘল রাজাদের হাত ধরে আসা ভারতের জনপ্রিয় খাদ্য
নাল্লি নীহারী: এটা মূলত তৈরি হয় খাসির বোনম্যারো অর্থাৎ হাড়ের অস্থিমজ্জা ব্যবহার করে। মনে করা হয়
মুঘল সম্রাটরা সকালবেলা প্রার্থনা হয়ে যাওয়ার পর এইটা দিয়েই প্রাতরাশ সাড়তেন। নবাবী মানুষদের নবাবি হালচাল।
Rogan josh (রোগান জোশ): আরো একটা বিখ্যাত মাংসের পদ। যেটা ভোজন রসিকদের খুব প্রিয়।
এই খাবারটা মুঘলদের দ্বারা কাশ্মীরে আনা হয়েছিল। তাবে এটা পার্শিয়ান কুসিন দ্বারা অনুপ্রাণিত। এটা
মূলত মটন দিয়ে তৈরি করা হয়। মটনের সাথে তেল দেই ও বিভিন্ন রকম ভারতীয় মশলা মিশিয়ে সুস্বাদু খাবার তৈরি করা হয়।
মটন শিখ কাবাব : মুঘলদের দ্বারা তৈরি বা আরও একটা বিখ্যাত খাবার। তবে তুর্কিদের অ্যানাটলিয়া যুদ্ধের সময় এই খাবারের উল্লেখ পাওয়া যায়।
ভোজন রসিকরা মনেকরেন যে তাদের জয়ের পিছনে আছে এই শিক কাবাব। এছাড়া আরবের মতো ,
দেশগুলোতে এই শিখ কাবাব লাহম মিশুই, যার বাংলা করলে দাড়ায় গ্রিল্ড করা মাংস। শিক কাবাব কে মূলত মসলা দিয়ে গ্রিল করে বানানো হয়।
Gauliti kabab (গলাউটি কাবাব): ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে লখনৌ নবাব ওয়াজিদ আলীর দাঁতের সমস্যা হয়েছিল,
এদিকে রাজা মটন খেতে খুব ভালবাসতেন, দাঁতের সমস্যার জন্য তিনি মটন খেতে পারছিলেন না
এই দেখে তার খানসামা দের খুব খারাপ লাগে, রাজারই এক খানসামা এর উপায় বার করলেন,
পেপের সাথে মটন পেস্ট করে মিশিয়ে এবং আরো নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে তৈরি করে ফেললেন গলৌটি কাবাব।
পরে রাজা মশায়ের সে হেঁসেল থেকে এই কাবাব পৌছে গেছে পৃথিবীর কোনায় কোনায় ।
Buriyani (বিরিয়ানি): বিরিয়ানি শব্দটি এসেছে ফারসি বিরিয়ান শব্দ থেকে, যার অর্থ রান্না করার আগে ভাজা।
বিরিঞ্জ শব্দটির পারসি অর্থ হল ভাত। বিরিয়ানির ইতিহাস নিয়ে কথা প্রচলিত আছে।
তবে ঐতিহাসিকরা মনে করেন বিরিয়ানির উৎস পারস্য থেকে আর মুঘলদের দ্বারাই বিরিয়ানি ভারতবর্ষে প্রবেশ করেছিল।
নার্গিসি কোফতা: মোগল আমলে লখনৌ তে এই খাবারের উৎপত্তি বলে জানা যায়।
এটি মুলত একটা কাবাব, বা কোফতা, যার মাঝখানে একটা কোফতা আর মুরগির ডিম থাকে।
মোগলাই পরোটা: ঐতিহাসিক দের মতে এই পরোটা এসেছিল মুঘল রাজা জাহাঙ্গীরের আমলে।
চিকেন কোরমা: ভারতের মুঘল যুগের রন্ধন ঐতিহ্যের অন্যতম খাবার ছিল চিকেন কোরমা ।১৬ শতকে
এই খাবার খুব জনপ্রিয় ছিল ।জানা যায় শাহজাহান তাজমহল উদ্বোধনের সময় তার অতিথিদের চিকেন কোরমা পরিবেশন করেছিলেন।
মুর্ঘ মালাই কাবাব: জানা যায় মুঘল শেফরা একটা খাবার তৈরি করতে চেয়েছিলেন যে যে খাবার টা বেশ
রসালো, ক্রিমি দুটোই হবে। যার ফলাফল ছিল মূর্ঘ মালাই কাবাব। এটা সেই খাবার ছিল যেটা
মুঘলদের বিলাসিতা ও পরিমার্জিতাকে প্রদর্শন করেছিল।
শাহী টুকদা: এতক্ষণ তো বললাম আমিষ খাবারের কথা এবার আসবো মিষ্টিতে।
শাহী টুকদা ছিল মুঘলদের প্রিয় মিষ্টি খাবারের মধ্যে একটা। তবে এটা প্রথম তৈরি করা হয়েছিল হায়দ্রাবাদে।